রাব্বানা দিয়ে কুরআন থেকে বাংলা উচ্চারণ সহ ৪০ টি দোয়া

রব্বানা অর্থ “হে আমাদের রব”।
পবিত্র কুরআন থেকে শক্তিশালী রব্বানা দোয়া গুলো সুন্দর ভাবে আরবি বাংলা উচ্চারণসহ আলোচনা করা হয়েছে । বিপদে আপদে আমরা প্রার্থনা করি আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়া’লার নিকট। ‘রব্বানা’ অর্থাৎ, 'হে আমাদের রব’ বলে আমরা হাত তুলি মহান মালিকের আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়া’লার কাছে। তিনি সারা দিবেন আমাদের ডাকে। সুন্দর অর্থবাচক এই দুআগুলো তিনিই শিখিয়েছেন আমাদের। আসুন, পবিত্র কুরআনে বর্ণিত দুআগুলো শিখে নিই আজ-

রাব্বানা যালামনা আনফুসানা
উচ্চারণ- " রাব্বানা যালামনা আনফুসানা ওয়া ইল্লাম তাগফিরলানা ওয়া তারহামনা
লানাকুনান্না মিনাল খাসিরীন। "
অনুবাদঃ হে আমাদের পালনকর্তা ! আমরা নিজেদের প্রতি অন্যায় করেছি, তুমি যদি আমাদের ক্ষমা না করো, আমাদের প্রতি করুণা না করো তবে আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবো।
[আল কুরআন: সূরা আ‘রাফ, আয়াত ২৩]

রাব্বানা লা তুযিঘ কুলুবানা বা-দা ইয
উচ্চারণ-
রাব্বানা লা তুযিঘ কুলুবানা বা-দা ইয হাদায়তানা ওয়া হাব লানা মিল্লাযুনকা রাহমাহ ইন্নাকা আন্তাল ওয়াহাব,
অনুবাদঃ
হে আল্লাহ! তুমি আমাদেরকে তোমার দেখানো পথ থেকে পথভ্রষ্ট হতে দিও না এবং আমাদের ক্ষমা কর। নিশ্চয়ই আপনি দানশীল।
[ সূরা আল-ইমরান, আয়াতঃ ৮ ]

রব্বানা-হাবলানা-মিন
উচ্চারণ : রব্বানা-হাবলানা-মিন আজওয়াজিনা ওয়া জুররিয়্যাতিনা কুররতা আ’ইউনিউ ওজা আলনা লিল মুত্তাকিনা ইমামা।
অনুবাদঃ হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদের এমন স্ত্রী ও সন্তানাদি দান কর, যারা আমাদের চোখ জুড়িয়ে দেয় আর আমাদের মুত্তাকিদের নেতা বানিয়ে দাও
(সূরা : ফুরকান, আয়াত : ৭৪)।

রাব্বানা ওয়ায-আলনা মুসলিমেনি লাকা-
উচ্চারণ-
রাব্বানা ওয়ায-আলনা মুসলিমাইনা লাকা ওয়া মিন জুররিয়াতিনা উম্মাতান মুসলিমাতাল লাকা ওয়া আরিনা মানাসিকানা ওয়া তুব আলাইনা ইন্নাকা আন্তাত-তাউয়াবুর-রাহীম
অনুবাদঃ
হে আল্লাহ! আমাদেরকে আপনার উপর আজ্ঞাবহ করুণ এবং আমাদের বংশধর থেকেও একটি অনুগত জাতি সৃষ্টি করুণ, আমাদেরকে সঠিকভাবে ইবাদত করার পথ বলে দিন। আমাদেরকে ক্ষমা করুন। নিশ্চয়ই আপনিই একমাত্র তওবা কবুলকারী! পরমদয়ালু!
[ সূরা আল-বাক্বারাহ, আয়াতঃ ১২৮
]

রাব্বানা তাকাব্বাল মিন্না ইন্নাকা আন্তাস
উচ্চারণ-
রাব্বানা তাকাব্বাল মিন্না ইন্নাকা আন্তাস সামিউল আলীম
অনুবাদঃ
হে আল্লাহ! আমাদের এই কাজটি কবুল করুণ। নিশ্চয়ই আপনি সর্বশ্রোতা এবং সর্বজ্ঞ।
ফযিলত
১। কাবা শরীফের নির্মাণ কাজ শেষ করার পর হযরত ইবরাহীম (আঃ) এবং ইসমাইল (আঃ) এই দোয়াটি পড়েছিলেন।
২। এই দোয়ার মাধ্যমে হযরত ইবরাহীম (আঃ) এই শিক্ষাই দিয়েছিলেন যে মানুষের শুধু কোন মহৎ কাজ শেষ করেই তৃপ্ত না হয়ে কিংবা গর্ব না করে, বরং ঐ কাজটি কবুলের জন্যে আল্লাহ্র কাছে দোয়া করতে হবে।
[ সূরা আল-বাক্বারাহ, আয়াতঃ ১২৭ ]

রাব্বানা লা তুখিজনা ইন্না সিনা
উচ্চারণ– রাব্বানা লা তুআখিজনা ইন্না সিনা আও আখ ত্বা’না।
রাব্বানা ওয়ালা তাহমিল্ আ’লাইনা ইসরান কামা হামাল্তাহু আ’লাল্লাযিনা মিন্ ক্বাবলিনা। রাব্বানা ওয়ালা তুহাম্মিলনা মা-লা- ত্বা ক্বাতালানা বিহ্ । ওয়া’ফু আন্না, ওয়াগ্বফির লানা, ওয়ার্ হামনা, আন্তা মাওলা-না ফানসুরনা আ’লাল্ ক্বাওমিল্ কাফিরিন।
অনুবাদঃ হে আমাদের রব, ভুল বা ত্রুটির জন্য পাকড়াও করবেন না; হে রব! পুর্ববর্তীদের ন্যায় আমাদের উপর বোঝা দেবেন না; হে আমাদের রব! আমাদের ক্ষমতার বাইরে কোন গুরুভার আমাদের উপর দেবেন না।আমাদের পাপ মোচন করুন, ক্ষমা করুন এবং আমাদের প্রতি দয়া করুন, আপনীই আমাদের একমাত্র অভিভাবক, কাফেরদের উপর আমাদেরকে বিজয়ী করুন।
(সুরা বাক্বারা, আয়াত -২৮৬)

রাব্বানা ওয়ালা তাহ-মিল আলাইনা
উচ্চারণ-
রাব্বানা ওয়ালা তাহ-মিল আলাইনা ইসরান কামা হামাল-তাহু আলাল-লাযীনা মিন কাবলিনা
অনুবাদঃ
হে আল্লাহ! আমাদের উপর এমন গুরু দায়িত্ব চাপিয়ে দিওনা, যেমনটি আমাদের পূর্বগণের উপরে দিয়েছ।
[ সূরা আল-বাক্বারাহ, আয়াতঃ ২৮৬ ]
ফযিলত
১। সূরা আল-বাকারার অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ শেষ দুই আয়াত এর দ্বিতীয় আয়াত।
২। আল্লাহ্র রাসুল আল্লাহ্ পক্ষ থেকে তাঁর কাছে যা পাঠানো হয়েছে তাতে বিশ্বাস করতেন এবং মুমিনগণও তাই করতেন। সকল মুমিনই আল্লাহ্, আল্লাহ্র রাসুল, ফেরেসেতা, আসমানি কিতাব এবং প্রেরিত রাসুলদেরকে বিশ্বাস করতেন।
তাঁরা বলেন, আল্লাহ্র প্রেরিত রাসুলদের মধে আমরা কোন ভেদাভেদ করিনা। আমরা শুনি এবং সেই অনুযায়ী কাজ করি। এ জন্যেই আমরা যদি এসব কোন বিষয়ে ভুলে যাই কিংবা ভুল করি, তাঁর জন্যে আল্লাহ্র কাছে ক্ষমা চেয়ে দোয়া করতে হবে।

রাব্বানা ওয়ালা তুহাম্মিলনা মা লা তাকাতা
উচ্চারণ-
রাব্বানা ওয়ালা তুহাম্মিলনা মা লা তাকাতা লানা বিহি ওয়া-ফু আন্না ওয়াঘফির লানা ওয়াইরহামনা আন্তা মাওলানা ফানসুরনা আলাল-কওমিল কাফিরীন
অনুবাদঃ
হে রাব্বুল আলামিন! আমাদের উপর এমন গুরু দায়িত্ব চাপিয়ে দিওনা যার ভার আমরা সইতে পারবনা। আমাদেরকে মাফ করুন এবং আমাদের ক্ষমা কবুল করুন। আমাদেরকে দয়া করুন। তুমিই আমাদের প্রভু এবং আমাদেরকে কাফের সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে জয়ী করে তোল।
[ সূরা আল-বাক্বারাহ, আয়াতঃ ২৮৬ ]
ফযিলত
১। হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, এই দোয়া রাসুলুল্লাহ (সাঃ) করেছেন এবং তা কবুল হয়েছে। (তাফসীর মাযহারি)।
২। হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত, একদা আমরা জিবরাঈল (আঃ) সহ রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর সাথে বসেছিলাম। হঠাৎ একটা দরজা খোলার শব্দ শুনতে ফেলাম। জিবরাইল (আঃ) সাথে সাথে তাঁর দৃষ্টি দিয়ে দেখলেন এবং বললেন যে দরজাটি এখন খুলল তা আসলে সাধারনত খুলেনা।
বর্ণনাকারী বলেন, সাথে সাথে নবীর কাছে একজন ফেরেশতা এসে বলেন, ''আপনাকে জান্নাতের দুই ধরনের আলোর সুসংবাদ দিতে আসলাম যা অতীতের কোন রাসুলকে দেয়া হয়নি। প্রথমটি হচ্ছে সূরা ফাতিহা এবং পরেরটি সূরা বাকারাহ এর শেষ আয়াত। আপনি যদি এর মধ্য থেকে একটি অক্ষরও পড়েন, আপনি জান্নাতের সেই আলো ভোগ করতে পারবেন। (সহিহ মুসলিম)
৩। আবু সা'ইদ (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসুল্লুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন সূরা বাকারাহ এর শেষ দুই আয়াত সমগ্র রাতের জন্যেই যথেষ্ট।

রাব্বানা ইন্নাকা জামিউন নাসি
উচ্চারনঃ রাব্বানা ইন্নাকা জামিয়ুননাসি লিয়াওমিল লারাইবা ফিইহি ইন্না আল্লাহা লা ইউখলিফুল মিয়াদ
অনুবাদঃ হে আমাদের পালনকর্তা! তুমি মানুষকে একদিন অবশ্যই একত্রিত করবেঃ এতে কোনই সন্দেহ নেই। নিশ্চয় আল্লাহ তাঁর ওয়াদার অন্যথা করেন না।
[সুরা ইমরান ৯]
Arrive in Style
Upgrade your look this season with the classic design and vintage feel of Polaroid apparel.
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন